বার্টোল্ট ব্রেশ্টের
অত্যাচারী
অনুবাদ : সুদেষ্ণা মিত্র
ঠিক কতকগুলি দিক একটা বিশেষ চরিত্রে দেখানো যেতে পারে তারই নিদর্শন একটি ঘটনার মাধ্যমে এক রুশিয় চলচ্চিত্র কার্যালয়ে দেখানো হচ্ছিল । আপাততভাবে এর হয়তো কোন গুরুত্ব ছিল না। তবে একটা আকর্ষণ নিশ্চয় ছিল। যখন “সাদা ঈগল”— এই চলচ্চিত্রটি যা প্রধানত: দক্ষিণ রাশিয়ার যুদ্ধ পূর্ববর্তী সংঘবদ্ধ হত্যাকাণ্ডের উপর—ঐ বিশেষ চিত্র কার্যালয়ে মহরা দেওয়া হচ্ছিল, সেই সময় সেখানে একজন বৃদ্ধ চাকরির প্রার্থনা নিয়ে এসেছিল। সে রাস্তার ধারে পোর্টার বাকসের প্রবেশ পথে প্রায় জোর করে ঢুকে পড়েছিল, এবং পোর্টারকে বলেছিল যে পুরো চিত্র কম্পানিকে দেখাতে চায় যে ভয়াবহ রাজ্যপাল মুরাটভের সঙ্গে তার চেহারার কি অসামান্য সাদৃশ্য বিদ্যমান। সেই সময় মুরাটভ ছিলেন একজন ঐতিহাসিক চরিত্র যিনি ইহুদিদের রক্তস্রোত বইয়ে দিয়েছিলেন এবং যে চলচ্চিত্রের কাজ চলছিল সেই চিত্রে তিনিই ছিলেন প্রধান চরিত্র ।
তার মুখের দিকে তাকিয়ে পোর্টার হেসে ফেলেন, সে বৃদ্ধ কিন্তু সেখান থেকে চলে গেলেন না বরং সমস্ত লোকের পিছনে এসে দাঁড়ালেন। ঘটনাচক্রে সেই সময় শুটিং এর বিরতি হওয়ায় অভিনেতারা ক্যান্টিনের দিকে পা বাড়ালেন অথবা নিছকই আড্ডা দিতে লাগলেন। কোচালভ, মস্কোর বিখ্যাত অভিনেতা মুরাটভের ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন, পোর্টারের দিকে এগিয়ে এলেন একটা ফোন করার জন্য, এবং এই সময় তিনি হঠাৎই দেখতে পেলেন ডেস্কের পেছনে সেই লোকটিকে, তখন তার চারপাশে এক হাসির ফোয়ারা উঠলো এবং চারপাশের পোর্টার ও অন্যান্য লোকেরা অবাক হয়ে গেল । কারণ কোচালভের মেক-আপ ঐতিহাসিক ফটোগ্রাফের ভিত্তিতে মুরাটভের মত করা হয়েছিল। বৃদ্ধ লোকটির সঙ্গে তার অসামান্য সাদৃশ্য তাদের ভয়ানক বিস্মিত করেছিল।
আধঘণ্টা পরে বৃদ্ধ লোকটি পরিচালকদের সঙ্গে এবং কোচালভের সঙ্গে বসে এই চলচ্চিত্রে কোচালভের “ডবল” এর ভূমিকায় যোগদানের ব্যাপারে আলোচনা করছিল। বৃদ্ধ লোকটির কাজ পাওয়াটা আরও সহজ হয়ে গেছিল, এই কারণে যে কোচালভ অত্যাচারী মুরাটভের ভূমিকায় অভিনয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছিল না। ফলে “ডবল” এর সুযোগ ঘটে গেল একটি স্ক্রীন টেস্ট দেওয়ার।
নতুন লোককে দিয়ে ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করানো কোন নতুন ঘটনা নয় । পরিচালকদের বিশেষ পদ্ধতি অাছে এই ধরনের লোকদের নিয়ন্ত্রিত করবার। মুরাটভের সঙ্গে বৃদ্ধটির সাদৃশ্য পরিচালককে খুবই আশারাদী করে তুলেছিল। তিনি বৃদ্ধটিকে বললেন যে সে কিভাবে মুরাটভকে কল্পনা করেছে তা অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করতে। তারা এই অভিনয়ের জন্য যে বিশেষ অংশটি পছন্দ করলো তা হল মুরাটভ ইহুদিদের ডেপুটেশন গ্রহণ করছেন যারা তাকে অনুরোধ করছে হত্যা বন্ধ করার জন্য। দৃশ্যটি এইরূপ : ( মুরাটভের প্রবেশ, টুপি এবং অস্ত্র দেওয়ালের পেরেকে ঝুলিয়ে রাখবে, নিজের ডেস্কের দিকে এগিয়ে যাবে । অতঃপর খবরের কাগজে চোখ বোলানো ইত্যাদি)। বৃদ্ধ পরিধান করলো হাল্কাভাবে তৈরী সাম্রাজ্যবাদী রাজ্যপালের পোষাক। রাজ্যপালের অফিস ঘরের প্রমাণ সাপেক্ষ কৃ্ত্রিম ভাবে তৈরি ঐতিহাসিক সেটে মুরাটভের ভূমিকায় অভিনয় করবার জন্য প্রস্তুত বৃদ্ধটি নিজেকে যেভাবে প্রকাশ করলো তা এইরূপ : ডেপুটেশনের অপেক্ষা । (মুরাটভের প্রবেশ।) “ডবল” (বৃদ্ধ লোকটি) তাড়াতাড়ি দরজায় এসে উপস্থিত হলো। পকেটে হাত, ক্লান্ত, অবসাদগ্ৰস্থ ভঙ্গি । (টুপি এবং অস্ত্র দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখা ) নাটকের শর্ত মেনে পুরো ঘরটাকে ব্যবহার করার পরিবর্তে সে ডেস্কে গিয়ে বসে পড়লো এবং তার টুপি এবং অস্ত্রকে খুলে রাখতেও ভুলে গেল। সকালের কাগজে চোখ বোলানোর কাজটিও “ডবল” করল সম্পূর্ণ অন্যমনস্কভাবে। এমনকি সে অবনতমস্তকে বসে থাকা ইহুদিদের দিকেও তাকাল না। ইতস্ততঃ ভাবে কাগজটা পাশে সরিয়ে রাখলো । সে একদম অনিশ্চিত যে কিভাবে সে ইহুদিদের ব্যাপারে মন দেবে। পরিচালকমণ্ডলীর দিকে সে একবার করুণভাবে তাকালো ।
বৃদ্ধের অবস্থা দেখে পরিচালকমণ্ডলীর পক্ষে হাসি চাপা দুষ্কর হয়ে উঠলো তখন অন্যতম সহকারি পরিচালক মঞ্চে উঠলেন “ডবলের” পাশে বসে তাকে সাহায্য করতে চাইলেন। “এখন আপেল খেতে শুরু কর।” –তিনি উৎসাহ দিয়ে বললেন, “মুরাটভের আপেল খাওয়া এক বিখ্যাত ব্যাপার। তার রাজ্যপালের ভূমিকা এবং ভয়ংকর অত্যাচারগুলির পাশাপাশি একমাত্র একাগ্রতা দেখা যেত আপেল খাওয়ায় । সে ড্রয়ারে আপেলগুলো রাখতো, দেখো এখানে আপেলগুলো আছে।” ‘ডবলের’ বাঁদিকের ড্রয়ারটি খুললো— “এইবার ডেপুটেশন শুরু এবং প্রথম লোকটি তার মুখ খুলবে তুমিও আপেল খেতে শুরু করবে।”
“ডবল অত্যন্ত মন দিয়ে তার কথা শুনছিল এবং এক একাগ্রতা নিয়ে আপেলগুলোর দিকে তাকিয়েছিল। মনে হচ্ছিল আপেলগুলি যেন তার কাছে এক বৃহৎ প্রস্তাব নিয়ে উপস্থিত হয়েছে।
যখন শুটিং আবার আরম্ভ হল মুরাটভ খুব আস্তে ড্রয়ার থেকে একটা আপেল তার বাঁহাত দিয়ে বার করলেন এবং ডান হাত দিয়ে কিছু কাগজে হিজিবিজি কাটতে কাটতে আপেল খেতে লাগলেন অনেকটা অভ্যেসের বশেই । কিন্তু ঠিক সেই সময় ডেপুটেশন শুরু কিন্তু তিনি সম্পূর্ণভাবে আপেলে নিবিষ্ট হয়ে আছেন। কিছুক্ষণ পর যে সময় সে একটাও শব্দ শোনেনি, সে একটা স্বচ্ছন্দ ভঙ্গি দিল তার ডান হাত দিয়ে একজন ইহুদির প্রতি —“বাইরে কে আছ এদের নিয়ে যাও ” এরপর সে পরিচালকের দিকে অনিশ্চিতভাবে ঘুরে দাড়ালো। প্রধান পরিচালক তার জায়গায় বসে স্থির গলায় জিজ্ঞেস করলেন “তুমি কি ডেপুটেশন দৃশ্যটা শেষ হয়ে গেছে বলে মনে করছ।
বৃদ্ধ একটু ইতঃস্তত করে বললেন—“হ্যাঁ আমার মনে হয় এখন তাদের নিয়ে যাওয়াটাই ঠিক হত।”
প্রধান পরিচালক চারপাশে তাকালেন, “অত্যাচারী লোকেদের চরিত্রটা এত সরল হয় না। তোমাকে আরও খাটতে হবে।”
“কোনো অত্যাচারী এমন ব্যবহার করেনি।” তিনি বললেন “এভাবে একজন ছোট কেরানি ব্যবহার করতে পারে বলে আমার ধারণা। কোনরকম চিন্তাভাবনা ছাড়া এই চরিত্র অভিনয় করা সম্ভব নয়। তোমায় নিজেকে এই হত্যাকারীর জায়গায় ভাবতে হবে । তোমাকে তার মত হতে হবে । যাও এখন আবার চেষ্টা কর।”
“কোনো অত্যাচারী এমন ব্যবহার করেনি।” তিনি বললেন “এভাবে একজন ছোট কেরানি ব্যবহার করতে পারে বলে আমার ধারণা। কোনরকম চিন্তাভাবনা ছাড়া এই চরিত্র অভিনয় করা সম্ভব নয়। তোমায় নিজেকে এই হত্যাকারীর জায়গায় ভাবতে হবে । তোমাকে তার মত হতে হবে । যাও এখন আবার চেষ্টা কর।”
সে আবার ওই বিশেষ দৃশ্যের নতুন রূপদান করার চেষ্টা করলো। সে সুক্ষভাবে দৃশ্যটা গড়ে তোলার এবং চরিত্রটিকে আরও উন্নত করে তোলার সাধ্যমত চেষ্টা চালাল এবং পুরো ব্যাপারটা খুব যে খারাপ হল তাও না। মনে হচ্ছিল সে অন্যান্যদের মতই ক্ষমতা অর্জন করেছে অত্যাচারীর ভূমিকায় অভিনয়ের ক্ষেত্রে । মনে হয় তার যা কিছু অভাব তা হল তার নিজের সম্পর্কে কল্পনার ক্ষেত্রে। এই বিশেষ দৃশ্যে আধঘণ্টা অভিনয় করার পর দৃশ্যটা এমন হল : (মুরাটভের প্রবেশ) কাঁধ পেছনে, বুক সামনে, মাথায় স্পন্দনশীল গতি । দরজায় এসেই সে ইহুদি লোকটির দিকে শিকারী পাখির মত তাকাল। (টুপি দেওয়ালে ঝোলালো ) যেভাবে কোটটা রাখল তাতে তা নিচে পড়ে গেল । (ডেস্কের দিকে এগোন এবং সকালের কাগজে চোখ বোলান) সব কাজগুলি সে করলো অন্যমনস্কভাবে এবং সে হাতে এক জনপ্রিয় সঙ্গিতের সুরকে ভাঁজতে লাগল। একটু পরে সে আনতমুখে বসে থাকা ইহুদিদের দিকে ফিরে দাঁড়ালো হাতের পেছনের দিকে এক আড়ম্বরহীন ভঙ্গিমার মধ্যে দিয়ে ।
“তোমায় বোঝাতে পারবো না তবে তুমি যা করছিলে তা ঠিক নয় ।” পরিচালক বললেন- “এটা একটা খারাপ অভিনয় । এটা একরকম পুরোনো ধারার খলনায়ক, এভাবে আজকের দিনে এবং আজকের যুগে আমরা একজন অত্যচারীর চরিত্র তৈরি করতে চাইনা। এটা আদৌ মুরাটভ নয়।”
অতপরঃ পরিচালক উঠে দাঁড়িয়ে কোচালভের দিকে ইঙ্গিত করলেন, যে সমস্ত কিছুই পর্যবেক্ষন করছিল । মুরাটভের বিশাল চেয়ারে সে অর্থাৎ ‘ডবল’ বসেছিল অত্যন্ত যুবুথবু অবস্থায়, সে মেঝের দিকে তাকিয়ে ছিল, কারও কথাই তার কানে যাচ্ছিল না। সে খুব একাগ্রতার সাথে প্রত্যেককে অনুসরণ করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। ওই বিশেষ পরিস্থিতিকে আয়ত্তে আনবার এক ভয়ংকর প্রচেষ্টা সে করছিল । যে সব অভিনেতারা ইহুদি ডেপুটেশনের অভিনয় করছিল তারাও আলোচনায় অংশগ্রহণ করল । তাদের মধ্যে দুজন অতিরিক্ত শিল্পীর কথা ওখানে উপস্থিত প্রায় সবাই খুব মনোযোগের সঙ্গে শুনছিল কারণ সেই দুজন বৃদ্ধ ইহুদি ওই বিশেষ ডেপুটেশনের সদস্য হিসাবে মুরাটভের কাছে গিয়েছিল এবং তারাই ছিল প্রকৃত ঘটনার সাক্ষি । তাদের মতে যেভাবে “ডবল” অভিনয় করছিল তা মোটেই খারাপ নয়। মুরাটভের চরিত্রের মধ্যে যে আমলাতান্ত্রিক যান্ত্রিকতা ছিল যা কিনা অন্যান্যদের মধ্যে সাংঘাতিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করত তা ওই “ডবল” দারুন ধরতে পেরেছিল আর তাছাড়া প্রকৃতপক্ষে তাদের সাক্ষাৎকারের সময় মুরাটভ কোন আপেল খাচ্ছিল না। কিন্তু সহ পরিচালক তাদের বক্তব্যে মোটেই আমল দিলেন না “মুরাটভ সব সময়ই আপেল খেত” সে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাবে বলল “তুমি কি ঠিক বলছো ? তুমি সেখানে ছিলে ?”
ইহুদি দুজন একদমই নিজেদের পরিচয় ঘটা করে প্রকাশ করতে চাইছিল না এই সব কথায় তারা ভয় পেয়ে গেল, ফলে তারা স্বীকার করল যে হতে পারে : মুরাটভও একটি খেয়েছিল। তারা ঠিক স্পষ্ট মনে করতে পারছে না।
ঠিক সেই সময় “ডবল” ওই দলের মধ্যে ঢুকে সবাইকে প্রায় জোর করে সরিয়ে প্রধান পরিচালকের মুখোমুখি হল। সে জেদের বশে তার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলো। তার ক্ষীণ দেহে এক হঠকারী ভঙ্গি। সে যেন বুঝতে পেরেছে এরা তার কাছে কি চায়, রুটি রুজি হারাবার ভয় তাকে উত্তেজিত আর উজ্জ্বল করে তুলেছিল ।
“আমার মনে হয় আমি বুঝতে পারছি আপনি কি বলতে চাইছেন । সে হতে পারে একজন অত্যাচারী। দেখুন আমি আপনাকে বলছি আমরা এই আপেল দিয়ে কি করতে পারি। চেষ্টা করুন কল্পনা করতে ঃ আমি একটি আপেল নিচ্ছি এবং এটা আমি ঠিকভাবে ধরছি একজন ইহুদির নাকের ডগায় “নাও” আমি বলছি। এবং যতক্ষন সে—এই অবধি বলেই সে যথেষ্ট নাটকীয়তার সাথে একজন ইহুদি অভিনেতার সামনে গিয়ে দাঁড়াল, অভিনেতাটি ইহুদি ডেপুটিদের মুখপাত্রের ভূমিকায় অভিনয় করছিল।
“এখন আপনি এটা শুনুন,” সে বলল - “যতক্ষন তুমি এই আপেলটা ধরবে তোমাকে মনে রাখতে হবে, তোমাকে উপলব্ধি করতে হবে যে মৃত্যুভয় তোমার গলায় এসে আটকেছে। এবং তোমায় আপেলটা খেতে হবে। যদি আমি একজন রাজ্যপাল এটা তোমায় দিয়ে থাকি তাহলে তা তোমার প্রতি আমার এক মিত্রসুলভ আচরণ নয় কি ?” এবং সে পরিচালকের দিকে ফিরে দাঁড়াল “তার পর আমি মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেছিলাম। এবং মজার ব্যাপার, ইহুদিটা তখন আমার দিকে তাকিয়ে আপেলটা খাচ্ছিল।” প্রধান পরিচালক অবাক হয়ে তার কথা শুনছিল । কয়েক মুহুর্তের জন্য তিনি মনে মনে, দারুন উল্লাসিত হয়ে উঠলেন। বৃদ্ধ লোকটি তার সামনে মাথা হেঁট করে দাঁড়িয়েছিল রোখা উত্তেজিত তার থেকে লম্বা হঠাৎই এই নতুন অভিনেতাটির কর্তৃত্বপূর্ণ ব্যবহার তার অহমিকায় আঘাত করল। তার মনে হল এই বৃদ্ধটি তাকে উপহাস করছে না তো ?
কোচালভ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে “ডবলে”র পরিচালিত “আপেল দৃশ্যটি” লক্ষ করছিল। এবং এই দৃশ্যটি তার শৈল্পিক কল্পনার জগতে আলোড়ন তুললো । হাত দিয়ে নির্মম ভাবে ডবলকে একপাশে সরিয়ে রেখে সে দলটিকে বলল “অসাধারণ, সে যা বলতে চাইছে এটাই তার সার্বিক রূপ । সে ওই বিশেষ দৃশ্যটিকে এমনভাবে অভিনয় করতে শুরু করেছিল যা আমাদের প্রতিটি শিরা উপশিরাকে ঠাণ্ডা করে দিতে পারে। কোচালভের মতই সমগ্র ষ্টুডিও উচ্চ প্রশংসায় ফেটে পড়ল । বৃদ্ধটির মুখের উপর দিয়ে ঘামের ধারা বয়ে যাচ্ছে মুখে অপ্রস্তুত হাসি। কিন্তু ততক্ষণে কোচালভের কাছে দিনের আলোর মতই পরিস্কার হয়ে গেছে মুরাটভের চরিত্রটি মূর্ত করে তোলার অভিনয় পদ্ধতি।
কোচালভ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে “ডবলে”র পরিচালিত “আপেল দৃশ্যটি” লক্ষ করছিল। এবং এই দৃশ্যটি তার শৈল্পিক কল্পনার জগতে আলোড়ন তুললো । হাত দিয়ে নির্মম ভাবে ডবলকে একপাশে সরিয়ে রেখে সে দলটিকে বলল “অসাধারণ, সে যা বলতে চাইছে এটাই তার সার্বিক রূপ । সে ওই বিশেষ দৃশ্যটিকে এমনভাবে অভিনয় করতে শুরু করেছিল যা আমাদের প্রতিটি শিরা উপশিরাকে ঠাণ্ডা করে দিতে পারে। কোচালভের মতই সমগ্র ষ্টুডিও উচ্চ প্রশংসায় ফেটে পড়ল । বৃদ্ধটির মুখের উপর দিয়ে ঘামের ধারা বয়ে যাচ্ছে মুখে অপ্রস্তুত হাসি। কিন্তু ততক্ষণে কোচালভের কাছে দিনের আলোর মতই পরিস্কার হয়ে গেছে মুরাটভের চরিত্রটি মূর্ত করে তোলার অভিনয় পদ্ধতি।
আলোগুলি জ্বলে উঠলো। ক্যামেরাগুলো প্রস্তুত হল । ছবি তোলা শুরু হল। কোচালভ মুরাটভের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করছে। সে এটা আবার প্রমাণ করলো যে শারীরিক সাদৃশ্য একজন অত্যাচারীর ভূমিকার অভিনয়ের জন্য মোটেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।
আগের সাম্রাজ্যবাদি রাজ্যপাল কুখ্যাত মুরাটভ পোর্টারের বাক্স থেকে তার টুপিটা তুলে নেয়, পোর্টারকে বিনীতভাবে বিদায় জানায় তারপর সেই ঠাণ্ডা অক্টোবরের দিনটিতে নিজেকে টানতে টানতে নিয়ে গেলেন শহরের প্রান্তে যেখানে সে একটি বস্তিতে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। ওইদিন সে দুটো আপেল খেতে পেরেছিল এবং হাতে কিছু টাকাও পেয়েছিল, সেইদিন রাতের ঘুমের জন্য যা যথেষ্ট ।
আগের সাম্রাজ্যবাদি রাজ্যপাল কুখ্যাত মুরাটভ পোর্টারের বাক্স থেকে তার টুপিটা তুলে নেয়, পোর্টারকে বিনীতভাবে বিদায় জানায় তারপর সেই ঠাণ্ডা অক্টোবরের দিনটিতে নিজেকে টানতে টানতে নিয়ে গেলেন শহরের প্রান্তে যেখানে সে একটি বস্তিতে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। ওইদিন সে দুটো আপেল খেতে পেরেছিল এবং হাতে কিছু টাকাও পেয়েছিল, সেইদিন রাতের ঘুমের জন্য যা যথেষ্ট ।
No comments:
Post a Comment